Logo

হার্ট ম্যাটারস: চেক এড়িয়ে যাবেন না... তাড়াতাড়ি স্ক্রিনিং করুন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমান

  • 25 মে, 2025

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস - ডাক্তার স্টেথোস্কোপ ধরে লাল হৃদয় আকৃতির কাঠের মডেল

আপনি কি জানেন? প্রতি ঘণ্টায় ৭ জন থাই নাগরিক হৃদরোগে মারা যান! জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর ৫৮,৬৮১ জন থাই নাগরিক হৃদরোগ ও রক্তনালীর রোগে মারা যান, যা গড়ে প্রতি ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু। এই অবস্থাগুলো সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করে, তবে পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, বিশেষ করে ৪০+ বয়সী ব্যক্তিদের। হৃদরোগ প্রায়শই হঠাৎ আক্রমণ করে, তাই নিয়মিত হৃদয় স্ক্রীনিং জরুরি, যাতে প্রাথমিক সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ ও সময়মতো চিকিৎসা সম্ভব হয়।


হৃদরোগের প্রকারভেদ

  1. হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতা

  2. অনিয়মিত হৃদস্পন্দন

  3. করোনারি ধমনীর রোগ

  4. হৃদযন্ত্রের ভালভের রোগ

  5. মায়োকার্ডিয়াল ও পেরিকার্ডিয়াল রোগ

  6. জন্মগত হৃদযন্ত্রের ত্রুটি

সবচেয়ে সাধারণ হলো করোনারি ধমনীর রোগ (CAD), যা ধমনীর দেয়ালে চর্বির স্তর জমা হওয়ার কারণে হয়, ফলে হৃদয়ে রক্ত প্রবাহ কমে যায়। এর ফলে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ হ্রাস পায় এবং শেষ পর্যন্ত ধমনী বন্ধ হয়ে যায়।


হৃদরোগের ঝুঁকির কারণ

  1. বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে ধমনীর ক্ষতি, ব্লকেজ এবং হৃদপেশীর দুর্বলতা বাড়ে।

  2. লিঙ্গ: পুরুষদের সাধারণত ঝুঁকি বেশি, তবে মহিলাদের ঝুঁকি মেনোপজের পর বাড়ে।

  3. জিনগত কারণ: পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস, বিশেষ করে যদি বাবা-মা অল্প বয়সে আক্রান্ত হন।

  4. ধূমপান: নিকোটিন রক্তনালী সংকুচিত করে; কার্বন মনোক্সাইড ধমনীর আস্তরণ ক্ষতি করে।

  5. খাদ্যাভ্যাস: উচ্চ স্যাচুরেটেড/ট্রান্স ফ্যাট, লবণ, চিনি এবং কোলেস্টেরল।

  6. উচ্চ রক্তচাপ: অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ধমনী শক্ত/মোটা করে দেয়।

  7. উচ্চ কোলেস্টেরল: এলডিএল ("খারাপ কোলেস্টেরল") বাড়লে CAD-এর ঝুঁকি বাড়ে।

  8. ডায়াবেটিস: হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

  9. স্থূলতা: ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপের সাথে সম্পর্কিত।

  10. নিষ্ক্রিয় জীবনযাপন: স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে অবদান রাখে।

  11. চাপ: স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় করে, হৃদয়ে চাপ দেয়।


প্রাথমিক সনাক্তকরণের পদ্ধতি

হৃদরোগ নিম্নলিখিত স্ক্রীনিংয়ের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা যায়:

1. ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাফি (EKG)

  • উদ্দেশ্য: হৃদয়ের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ সনাক্ত করে মায়োকার্ডিয়াল ইস্কেমিয়া, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা বুকে ব্যথার কারণ নির্ণয় করে।

  • পদ্ধতি: বুক, বাহু এবং পায়ে ইলেক্ট্রোড লাগিয়ে হৃদস্পন্দন কাগজে রেকর্ড করা হয়। সময় লাগে ১৫ মিনিটের কম।

  • উপযুক্ত: ৪০+ বয়সী, উচ্চ কোলেস্টেরল, ধূমপান, ডায়াবেটিস বা লক্ষণ (ধড়ফড়, বুকে ব্যথা, ক্লান্তি) থাকলে।

  • সীমাবদ্ধতা: হৃদয় যদি চাপে না থাকে, তবে অস্বাভাবিকতা ধরা নাও পড়তে পারে।

2. ব্যায়াম স্ট্রেস টেস্ট (EST)

  • উদ্দেশ্য: শারীরিক পরিশ্রমের সময় (যেমন ট্রেডমিলে হাঁটা) হৃদয়ের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে গোপন করোনারি সমস্যা সনাক্ত করে।

  • পদ্ধতি: ট্রেডমিলে ১০-১৫ মিনিট হাঁটা/দৌড়ানো।

  • উপযুক্ত: ৪০+ বয়সী, যাদের ব্যায়াম-সম্পর্কিত বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট আছে।

  • সীমাবদ্ধতা: জয়েন্ট/হাড়ের সমস্যা থাকলে উপযুক্ত নয়; হৃদয়ের গঠন দেখায় না।

3. ইকোকার্ডিওগ্রাম (ইকো)

  • উদ্দেশ্য: আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে হৃদয়ের গঠন, কার্যকারিতা, রক্ত প্রবাহ, ভালভের কার্যকলাপ এবং পেশী সংকোচন মূল্যায়ন করে।

  • পদ্ধতি: বুকে জেল লাগিয়ে প্রোব ঘুরিয়ে রিয়েল-টাইম ছবি তৈরি করা হয়। সময় লাগে ~১৫ মিনিট।

  • উপযুক্ত: ফোলা, শ্বাসকষ্ট, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা হৃদরোগের ঝুঁকি থাকলে।

  • সীমাবদ্ধতা: করোনারি ধমনী দেখায় না।


শীঘ্রই পদক্ষেপ নিন: ঝুঁকি কমান

প্রাথমিক স্ক্রীনিং জীবন বাঁচায়। হৃদরোগ প্রতিরোধ বা কার্যকরভাবে চিকিৎসার জন্য অস্বাভাবিকতা শীঘ্রই সনাক্ত করুন।

More Events