Logo

যক্ষ্মা: একটি সংক্রামক রোগ যার জন্য বোঝাপড়া প্রয়োজন

  • 25 মে, 2025

medium-shot-man-coughing-scaled

যক্ষ্মা (টিবি) বোঝা

যক্ষ্মা (টিবি) একটি সংক্রামক রোগ যা Mycobacterium tuberculosis (এর Mycobacterium tuberculosis কমপ্লেক্স অংশ) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা হয়। যক্ষ্মা যেকোনো অঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে, তবে ৮০% ক্ষেত্রে ফুসফুসে হয়, কারণ ব্যাকটেরিয়া সাধারণত শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। ফুসফুসের যক্ষ্মা সংক্রামক এবং বাতাসের মাধ্যমে সহজেই ছড়ায়—শ্বাস, কাশি, হাঁচি, বা সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে দীর্ঘক্ষণ ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে থাকলে। ব্যাকটেরিয়া ঘন্টার পর ঘন্টা বাতাসে থাকতে পারে, ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম, বৃদ্ধ ও শিশুদের ঝুঁকি বেশি।


টিবি কীভাবে ছড়ায়?

টিবি বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। টিবি রোগী কাশি, হাঁচি, চিৎকার, হাসি বা গান গাইলে সংক্রামক ড্রপলেট (১-৫ মাইক্রন আকারের) বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। ছোট ড্রপলেট বাতাসে ভেসে থাকে, অন্যরা তা শ্বাসের সাথে গ্রহণ করতে পারে। সংক্রমণের ঝুঁকি তিনটি বিষয়ে নির্ভর করে:

  1. সংক্রমণ ক্ষমতা: যাদের কফে টিবি আছে তারা বেশি সংক্রামক।
  2. সংস্পর্শের সময়কাল: ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ (যেমন পরিবারের সদস্য, সহকর্মী) ঝুঁকিপূর্ণ।
  3. পরিবেশ: খারাপ বায়ুচলাচল, ভিড়, ছায়াযুক্ত/ভেজা জায়গা (যেখানে ব্যাকটেরিয়া ৬ মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে) সংক্রমণ বাড়ায়।

যক্ষ্মার উপসর্গ

  • ২ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী কাশি (শুষ্ক বা কফসহ)।
  • কফের সাথে রক্ত
  • হালকা জ্বর (বিকেল/রাতে)।
  • রাতে ঘাম হওয়া।
  • ক্ষুধামন্দা, অজানা ওজন কমে যাওয়া, দুর্বলতা।
    নোট: কিছু রোগীর কোনো উপসর্গ নাও থাকতে পারে, কিন্তু এক্স-রেতে টিবির চিহ্ন দেখা যায়।

টিবি চিকিৎসা

টিবি ৬-৯ মাস নিয়মিত ওষুধ সেবনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য, রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে। চিকিৎসায় থাকে:

  • প্রথম সারির ওষুধ: আইসোনিয়াজিড, রিফ্যাম্পিসিন, ইথাম্বুটল, পাইরাজিনামাইড।
  • পর্যবেক্ষণাধীন চিকিৎসা (DOT): পরিবার বা স্বাস্থ্যকর্মী ওষুধ খাওয়া, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও মানসিক সহায়তা দেখভাল করেন।

রোগীর জন্য নির্দেশনা

  1. সংক্রমণ প্রতিরোধ:
    • চিকিৎসার কমপক্ষে ২ সপ্তাহ পর্যন্ত কাশি/হাঁচির সময় মাস্ক পরুন।
    • কাশি/হাঁচির সময় টিস্যু দিয়ে মুখ ঢাকুন, প্রতিদিন বন্ধ পাত্রে ফেলুন বা পুড়িয়ে ফেলুন।
    • হাত ধোয়া, কফ বন্ধ পাত্র বা টয়লেটে ফেলুন।
  2. ওষুধ:
    • প্রতিদিন নিয়মিত ওষুধ খান, মাঝপথে বন্ধ করবেন না, যাতে ওষুধ প্রতিরোধ হয় না।
    • ডাক্তারের ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত ফলোআপে যান।
  3. জীবনযাপন:
    • পুষ্টিকর খাবার খান (মাংস, ডিম, দুধ, ফল, শাকসবজি)।
    • ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস নিশ্চিত করুন।
    • মদ, ধূমপান, মাদক এড়িয়ে চলুন (চিকিৎসায় বাধা দেয়)।
  4. পরিবারের সদস্যদের পরীক্ষা:
    • পরিবারের সদস্য, বিশেষ করে শিশুদের এক্স-রে ও টিবি টেস্ট করুন।

More Events